পাখির বাসার স্যুপ||ভোজনযোগ্য পাখির বাসা||এডিবল পাখির বাসা
পাখির বাসা খাওয়ার প্রচলন
পৃথিবীতে কতই না অবাক করা কান্ড মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। অবাক করা কান্ডের একখানা ঘটনা আজ আপনাদের জানাবো। আচ্ছা আপনি কি কখনও ভেবেছিলেন পাখির বাসা ইংরেজিতে যাকে বলে নেস্ট, সেই পাখির বাসা আবার মানুষ আবার খায় তাও আবার চড়া দামে। আজ্ঞে হ্যাঁ বন্ধুরা একদম ঠিক পড়েছেন পাখির বাসা মানুষের ভোজনযোগ্য। এডিবল পাখির বাসার খাবার প্রচলন চীনা দেশে। এই পাখির বাসা তৈরি হয় এই পাখিদের লালা দিয়ে। চীনারা মনে করে এই পাখির বাসা খেলে খাওয়া ভালো। পুষ্টিগত দিক থেকে এবং এই বাসা খেলে ত্বকের সৌন্দর্য বজায় থাকে এবং মানুষ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়। বলা হয় যে চীনা রান্নায় ৪০০ বছর ধরে এই পাখির বাসা কে খাবার হিসাবে প্রচলন রয়েছে।
বাসার প্রকার
এই পাখির বাসা দুই ধরনের হয়। সাধারণত সাদা রঙের বাসাই বেশি বেশি দেখা যায় পাশাপাশি লাল রংয়েরও মাঝেমধ্যে এই বাসা নজরে আসে যাকে অনেক সময় Blood house বা রক্ত বাসা বলেও ডাকা হয়।
 |
বাটির আকারে এডিবল পাখির বাসা |
এডিবল পাখির বাসা সাধারণত হিসেবে খাওয়া হয় চীনারা বাসা কে জল গরম করলে সুস্বাদু মিষ্টি তরল হিসেবে পরিণত হয় যা তারা সুট হিসেবে খায় বলা হয় যে এডিবল পাখির এই বাসা ঝাল মসলা তেল দিয়ে খাবার থেকে সিদ্ধ করে খেলে তা বেশি উপকারী তাই চীনের কিছু রেস্টুরেন্টে যেখানে এই খাবার পাওয়া যায় সেখানে বাটি করে হিসেবে এই খাবার দেওয়া হয় আপনি শুনলে অবাক হবেন যে সিনিয়র রেস্টুরেন্টগুলোতে এক বাটি সুপের দাম প্রায় ১০০ ডলার। এছাড়া এই বাসাকে স্যুপ ছাড়াও ভাতের সাথে সিদ্ধ করে খাওয়া হয় যেহেতু এর স্বাদ মিষ্টি তাই অন্যান্য খাবারের সাথে ও মাঝেমধ্যে এর পরিবেশন করা হয়।
খাবারটি অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পরে
প্রথমে এই খাবারের প্রচলন চীনে থাকলেও পরে তা আশেপাশের কিছু দেশে ছড়িয়ে যায়। যদিও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ গুলিতে এই বাসা গুলি শিল্পের প্রতীক বা বলা অর্থ সমাগমের এক উৎস হিসেবে দেখা হচ্ছে। চিন ছাড়া দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে বেশি রপ্তানিকারক দেশ হলো ইন্দোনেশিয়া, এর পরে যথাক্রমে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড এবং। উইকিপিডিয়া অনুসারে ইন্দোনেশিয়া প্রতিবছর ২০০০ টন পাখির বাসা রপ্তানি করে, এরপরে মালয়েশিয়া, মালয়েশিয়া প্রতিবছর ৬০০ টন পাখির বাসা রপ্তানি করে, তারপর থাইল্যান্ড এই দেশ প্রতিবছর ৪০০ টন পাখির বাসা ইকবাল পাখির বাসা রপ্তানি করে এবং শেষে ফিলিপিনস মাত্র ৫ টন পাখির বাসা প্রতিবছর রপ্তানি করে থাকে।
 |
দেশে বিদেশে আমদানি রপ্তানিও চলে |
নকলের কারবার
এই বাসাটির এত রমরমা, চারিদিকে এত চাহিদা, এত দাম, ব্যবসায়ীদের কাছে এ এক আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ, আর ভেজাল নামক ব্যাপারটি না থাকলে কি আর হয়! ঠিক এখানেও ভেজালের একটা খবর পাওয়া গেছে। এক কিলো সাদা পাখির বাসা ২,০০০ মার্কিন ডলার এবং এক কেজি লাল বাসা ১০,০০০,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। স্বাভাবিভাবেই বোঝা যাচ্ছে লাল বাসাগুলো সহজলভ্য নয় আবার চাহিদাও আছে। এখানেই ব্যাবসায়ীরা নকলের কারবার করে ফেলে। প্রাকৃতিক লাল বাসা থাইল্যান্ডের পাক ফায়ুন জেলাতে চুনাপাথরের গুহায় প্রায়শই পাওয়া যায়। অসৎ ব্যাবসায়ীরা সাদা বাসাগুলোকে লাল রং করে প্রতারণা মারফত ব্যাবসা করত, বিদেশে রপ্তানি করত। পরবর্তীতে মালয়েশিয়া সরকার আরিফ আইডি নামক প্রযুক্তির সাহায্যে ভেজাল খাবার বন্ধ করার জন্য সচেষ্ট হয়েছে এই প্রযুক্তিতে বাসা সংগ্রহ তৈরি করা সংরক্ষন প্যাকেজিং এবং আমদানি পর্যন্ত সবক্ষেত্রেই সরকারি নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনা হয়েছে।
 |
খাওয়ার হিসেবে উপকরণ |
পৃথিবীর বৃহত্তম আমদানিকারক দেশ
হংকং এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাসা আমদানিকারক। হংকংয়ে, একটি বাটি পাখির বাসার স্যুপের দাম 30 মার্কিন ডলার থেকে 100 মার্কিন ডলার।
পাখির বাসা গুলি মোটামুটি গুহা এবং চুনাপাথর সংলগ্ন বাসভূমিতে লক্ষ্য করা যেত বাসাগুলো সমুদ্রের কাছাকাছি শহরগুলিতে কিছু ঘরে তৈরি করা হচ্ছে। অঞ্চলে চোখে পড়ে কিন্তু মোটামুটি বেশ কয়েক বছর হল এডিবল পাখির বাসা গুলি মানুষের দ্বারা নির্মিত হচ্ছে এবং তারা সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
পাখির বাসার উৎপাদক অং কিয়াও মো বলেছেন যে, বাসাগুলি সাধারণত বছরে তিন বা চারবার ফসল সংগ্রহ করা হয়, তবে ব্যাবসায়ীদের অর্থের প্রয়োজনবোধ হলে তারা মাসে একবার করেও পাখির বাসা সংগ্রহ করতে পারে। তিমি বলেছেন যে, যেহেতু এর চাহিদা সারা পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে, এবং কিছু দেশ এই বাসাকে নিয়ে রীতিমত বানিজ্য করতে নেমে পড়েছে তাই আগামী বছরগুলিতে এই শিল্পটি কেবল বাড়বে এবং বানিজ্যিক দিককেও প্রসারিত করবে।
অর্থনীতির নিয়ন্ত্রক
যেহেতু পাখির বাসার এত দাম এবং মোটামুটি সারাবিশ্বে সাহিদা এত চাহিদা তাই কিছু ব্যবসায়ী জন্য এটি সোনার খনি ছাড়া আর কিছুই নয় এই অন্যটি আমদানি রপ্তানির উপরেও মায়ানমার মালয়শিয়া থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশগুলির অর্থনীতি নির্ভর করে।
 |
সেদ্ধ করা হবে |
পৃথিবীর সবচেয়ে আশ্চর্যতম পাখি
শেষের কথা
কিন্তু যেহেতু এটি একটি পাখির বাসা অর্থাৎ একটি প্রাণী পণ্য তাই পাখির রোগ বা H 5N1 ফ্লু নিয়ে কতগুলি দেশ রীতিমত সতর্ক, এবং আরেকটা জিনিস যা না বললেই নয় তা হলো আমরা দেখে আসছি মানুষের ক্রমবর্ধমান লোভ সবকিছুকেই ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়, (ওরা তো খালি টাকা আর ক্ষমতাই বোঝে) তাই পাখির বাসার প্রতি ব্যবসায়ীদের লোভ এই প্রজাতির পক্ষে এবং পরিবেশের পক্ষে কতটা মঙ্গল জনক সে বিষয়ে নজর রাখাটা জরুরি।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
DEAR READERS, ANY SUGGETION FOR THIS BLOG AND ANY KIND OF POST, PLEASE COMMENT. BECAUSE YOUR VALUABLE COMMENT WILL BE TAKEN HAPPILY. IF YOU HAVE ANY DOUBT PLEASE LET ME KNOW.