মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা | মৌমাছির অবদান

            মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা । মৌমাছির অবদান


মৌমাছিদের মানুষের প্রতি এই পরিবেশের প্রতি যে অবদান, তার প্রথম অধ্যায় আমরা আলোচনা করেছি।  আমরা জেনেছি প্রাকৃতিক মধু যা মৌচাকে তৈরী হয় তার গুনাগুন নিয়ে , আর সাথে সাথে আমরা জেনেছি মৌমাছিদের অস্তিত্ব সংকটের ব্যাপারে। আমরা জেনেছি মৌমাছি না থাকলে মানুষদের অস্তিত্বও থাকবে না।  আজকে আমরা জানবো কি করে মৌমাছি মানুষ সহ সমগ্র জীবকুল তথা পরিবেশের প্রতি অবদানের ব্যাপারে।


                                                 মৌমাছির অবদানের ১ম অংশ
মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা,মৌমাছির অবদান, মৌমাছির অর্থ, মৌমাছির রচনা, মানুষের জীবনে মৌমাছির অবদান,মৌমাছির গল্প, মৌমাছির চাষ

                    মৌমাছির উপকারিতা





 পরাগযোগ

  আমরা ছোটো থেকেই মৌমাছিদের পরাগ যোগ পরাগায়ন সম্পর্কে জেনে এসেছি। আমরা জানি মৌমাছিরা পরাগায়ন প্রক্রিয়ায়  ফুল থেকে ফুলে উদ্ভিদ থেকে উদ্ভিদের পরাগ বহন করে।   আপনি শুনলে অবাক হবেন যে মানুষের জন্য সমস্ত খাদ্য ফসলের প্রায় ৮৫% ক্ষেত্রে মৌমাছির পরাগায়িত করার মাধ্যমে হয়। পরিসংখ্যানটা একবার ভাবুন ৮৫%


মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা,মৌমাছির অবদান, মৌমাছির অর্থ, মৌমাছির রচনা, মানুষের জীবনে মৌমাছির অবদান,মৌমাছির গল্প, মৌমাছির চাষ
পরাগযোগ 



               
                                        
 মৌমাছি উদ্ভিদের পরাগ বহন করে, ফসলের জন্ম দেয়, গাছের জন্ম দেয়। পরাগায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে  একটা ছোট বীজ কে বড় গাছে পরিণত করার দায়িত্ব মৌমাছি নিজের কাঁধে নিয়ে নিয়েছে। এই গাছগুলি বিভিন্ন পাখি এবং কাঠবিড়ালির মতো ছোট ছোট প্রাণীদের আশ্রয়স্থল। গাছপালা না থাকলে তারা থাকতো কোথায়? আবার এই গাছগুলিতে যে ফল ধরে সে ফলগুলি বিভিন্ন পাখি খায়, কাঠবিড়ালি খায় এভাবেই পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে। শুধু তাই না মৌমাছি যে অসংখ্য ফসলের জন্ম দেয, সেই ফসলই তো গবাদিপশুকে খাওয়ানো হয়। ফসল ঝেড়ে ফেলার পর জমিতে যেটুকু পড়ে থাকে তার খানিকটা আবার মানুষের কাজে লাগে এবং সেই বাছাই করা উচ্ছিষ্টগুলো হল আবার পাখিদের খাবার। মৌমাছি গাছগুলিকে বাড়তে দেয়। যার ফলস্বরূপ আমাদের এই সুন্দর বিশ্ব। মৌমাছি ফুলের পুনরাবৃত্তি ঘটায়। মৌমাছি ছাড়া বাগান, চারণভূমি এবং অন্যান্য পৃথিবীর সৌন্দর্যময় জায়গাগুলি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাবে। 




মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা,মৌমাছির অবদান, মৌমাছির অর্থ, মৌমাছির রচনা, মানুষের জীবনে মৌমাছির অবদান,মৌমাছির গল্প


পুষ্টিকর খাবার

  সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে মৌমাছির পরাগযোগ, মধুচক্র যদি কমতি দেখা যায় সে ক্ষেত্রে মানুষের পুষ্টির মারাত্মক অভাব দেখা দেবে। আর যদি পুষ্টির অভাব দেখা যায় তবে কোন মানুষকে সুস্থ মানুষ বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো। আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে ধরনের খাবার খাই সেই খাবারগুলো পুষ্টির উপাদান।  পুষ্টিকর খাবার জন্য আপনাকে কোন কোম্পানির পাউডার বা প্রোটিন পাউডার, বা ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সাম্প্রতিক একটি গবেষণাও চালানো হয়েছে যে মধুচক্রের আর অস্তিত্ব না থাকলে পরিবেশের পতনের দিন আসন্ন।

ফসল

 🍯 মধু মৌমাছির মূলত ফুল ,🌻 থেকে ফুল🌼  পরাগ সংগ্রহ করে এক গাছ থেকে অন্য উদ্ভিদে উড়ে যায়। কিছু কিছু পরাগ অনেক সময় অল্প বয়সে মৌমাছিদের পায়ে লেগে যায় যা অল্প বয়সী মৌমাছি গুলির বাঁচার জন্য ওড়ার জন্য কাজ করতে শক্তি যোগায়। মৌমাছিরা পরাগকে খাবারের জন্য ব্যবহার করে, যা রূপান্তরিত হয় শক্তিতে, মৌমাছিকে পরাগ সংগ্রহ এবং বিতরণ করার জন্য বর্ধিত সময়ের জন্য উড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়।  মৌমাছিদের কারণেই ফসলগুলি সাফল্য লাভ করে। মৌমাছিদের কারণেই ফুল, বাদাম, বীজ, মটরশুটি, ব্রোকলি, অ্যাস্পারাগাস, ক্যান্টালাপস, শসা, কুমড়ো, ব্লুবেরি, তরমুজ, বাদাম, আপেল, ক্র্যানবেরি এবং চেরির মতো অনেকগুলি সাধারণ, সুস্বাদু ফল এবং শাকসব্জি আরও অনেক কিছু আমরা খেতে পারি,উপভোগ করতে পারি।   


মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা,মৌমাছির অবদান, মৌমাছির অর্থ, মৌমাছির রচনা, মানুষের জীবনে মৌমাছির অবদান,মৌমাছির গল্প, মৌমাছির চাষ
মৌচাক 
                                     



পরিবেশ


এক কথায় বলতে হলে, মৌমাছি ছাড়া অনেক গাছের পুনরুত্পাদনের সম্ভাবনা থাকবে না এবং মরে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। বেশিরভাগ গাছপালা এবং ফুলের জীবনচক্রের মৌমাছিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমরা যেমন আগে জেনেছি মৌমাছিদের দ্বারা মানুষের  খাবারের প্রায় ৮৫% শতাংশ ফসল পরাগ যোগ এর কারনে হয় ছোট বীজ থেকে গাছ জন্মায় আবার ফুলে ফুলে উড়ে ফুলের পুনরাবৃত্তি ঘটায়মৌমাছিদের যদি নিঃস্বার্থ ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম না হয় তবে পরিবেশের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।


মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা,মৌমাছির অবদান, মৌমাছির অর্থ, মৌমাছির রচনা, মানুষের জীবনে মৌমাছির অবদান,মৌমাছির গল্প


আমরা সাধারণ মানুষেরা কি কিছু করতে পারি

  আমরা যেমন প্রথম অধ্যায়টিতে  পড়েছি মানুষের ক্রমবর্ধমান লোভ, রাসায়নিক সার কীটনাশক এর অপব্যবহার, কিছু অর্থলোভী ব্যবসায়ীদের কারণে এছাড়া নিওনিক্স এক ধরনের কীটনাশক এর কারণে মৌমাছিদের সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমছে। এক্ষেত্রে আমরা সাধারন মানুষেরা কি কিছু করতে পারি। আজ্ঞে হ্যাঁ, কিছুটাতো করা যেতেই পারে। ধরুন যদি আপনার বাড়ির আশেপাশে কোথাও খানিকটা খালি জমি থাকে সেই জমিতে আগাছা গুলো কেটে যদি আপনি কিছু ফলের গাছ লাগাতে পারেন নিদেনপক্ষে একটি ফুলের বাগান তো করা যেতেই পারে


 যদি আপনি এর মধ্যে কিছু একটা করলেন এরপরে যে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব আপনার উপরে বর্তায় তা হল ওই গাছগুলি তে ফুলের বাগানে কিংবা আগাছা পরিষ্কার করতে কোনরকম রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের ব্যবহার করা যাবে না। আরেকটা জিনিস বন্ধুরা বলে রাখি যখন আপনি ফুলের চারা বা গাছের চারা কিনবেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে নিওনিক্স কীটনাশকের কথা। সেই  চারাগুলি নিওনিক্স দ্বারা উৎপাদিত, বা প্রক্রিয়াজাত নয়তো। একটা ছোট জিনিস জানবেন রাখবেন যে কোন রাসায়নিক সার বা কীটনাশক এর ব্যবহার শুধুমাত্র মৌমাছিদের জন্য খারাপ ব্যাপারটা তো আসলে তা নয়। মানুষ সহ অন্যান্য কীটপতঙ্গ পশুপাখি কারও জন্যই রাসায়নিক সার প্র ভালো নয় সার মারাত্মকভাবে ক্ষতিকারক। যদি আপনি নিজ উদ্যোগে আপনার বাড়ির আশেপাশে এই ধরনের ফলের গাছ ফুলের বাগান লাগাতে পারেন তাতে আপনার নিজের লাভ হবে অসংখ্য। আগাছা পরিষ্কার হল, আবার গাছগাছালি ও লাগানো হলো, দেখতেও ভালো লাগলো, ফ্রীতে অক্সিজেন পেতে থাকবেন, আবার আপনার ফুল, বা ফল আপনি ব্যাবহার করতে পারলেন, মাঝেমধ্যে মৌমাছিরাও আসলে আসল, পাখিদের মিষ্টি আওয়াজ পাবেন, পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা ‌হলো। সবকিছু তো আর টাকা দিয়ে হয় না।


                                                                                                তথ্যগুলি ইন্টারনেট এবং ম্যাগাজিন দ্বারা সংগৃহিত
                                                                                                         সমস্ত ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত







মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সমুদ্রের জল লবনাক্ত কেন? সমুদ্রের জলে লবন কেন? সমুদ্রের জল নোনা কেন?

লাইফবয় সোপ ব্যানড / লাইফবয় সাবান পশুদের সাবান / লাইফবয় সাবান নিষিদ্ধ