বিজ্ঞানী গুবরে পোকা

                             বিজ্ঞানী গুবরে পোকা


  গুবরে পোকা এই নামটির সাথে আমরা মোটামুটি সকলেই পরিচিত। "গুবরে" নাম এর সাথে কোথাও না কোথাও "গোবর" শব্দটির  মিল পাওয়া যায়। গুবরে পোকা বা বিটল সমস্ত পতঙ্গদের মধ্যে এরাই হলো ৪০%। এদের সমগ্র প্রজাতির সংখ্যা ৪ লক্ষের মত। গোবর হল গুবরে পোকার 'অন্ন বস্ত্র বাসস্থানের' একমাত্র উপায়, না 'বস্ত্র' না। সাধারণত বেশিরভাগ গুবরে পোকা এই গোবরের মধ্যে সারা জীবন কাটিয়ে দেয়।

               
গুবরে পোকা, বিটল পোকা, বিজ্ঞানী গুবরে পোকা
গুবরে পোকা, বিটল পোকা
                   

গুবরে পোকা মিথেন গ্যাস কমাতে সাহায্য করে

  গোবরের মধ্যে গর্ত করে, মানে হলো ওই গর্ত দিয়ে প্রচুর পরিমাণে বাতাস ঢুকে। গরুর খাদ্যনালীতে প্রচুর পরিমাণে মিথেন তৈরি হয় শুধু গরু না যে কোনো জাবর কাটা প্রাণীদের খাদ্যনালীতে মিথেন তৈরি হয় যা তাদের মলের  সঙ্গে বেরোয়। মিথেন তো  গ্রীন হাউজ গ্যাস বাড়িয়ে দিয়ে পরিবেশের উষ্ণতা বাড়ায়, তাহলে তো গোবর পরিবেশের উষ্ণতা বাড়ায়। কিন্তু আবার  গোবর অনেক প্রজাতির প্রাণীর খাবার যোগায়। তাহলে গোবর, গুবরে পোকা এরা কি প্রকৃতির জন্য ভালো কি খারাপ?
   এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা বলেছেন যেহেতু গুবরে পোকা গোবরে গর্ত করে আর সেই গর্ত দিয়ে প্রচুর পরিমাণে বাতাস ঢুকে তাই বাতাস মানে অক্সিজেন, তাহলে অক্সিজেন গোবরের মধ্যে ঢুকে পড়ে।  গরুর খাদ্যনালীতে তো মিথেন থাকে, মিথেন কি? মিথেন হলো কার্বন এবং হাইড্রোজেনের যৌগ অর্থাৎ মিথেনে অক্সিজেন থাকে না। এই গুবরে পোকার গর্তে অক্সিজেন যুক্ত বাতাস এসে গোবরে থাকা মিথেন থেকে কার্বন মুক্ত করে পরিবেশে মিথেনের পরিমান কমায়। 

 একটু ব্যাখ্যা করা যাক, আমরা জানি বাতাস থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নিয়ে সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় গাছেরা খাবার বানায়। গরু যখন ঘাস লতাপাতা খায় তখন তারা এই কার্বন যুক্ত খাবারই খায়। আর এই খাবার যখন তাদের খাদ্যনালিতে হজম হয় তখন সেখান থেকে তৈরি হয়ে যায় মিথেন। মিথেন কার্বন-ডাই-অক্সাইড অপেক্ষা বেশি খারাপ কারণ মিথেন কার্বন-ডাই-অক্সাইডের থেকে পরিবেশে অধিক তাপমাত্রা বাড়ায়। গুবরে পোকা মিথেন মুক্ত করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার কাজ নিঃশব্দ করে থাকে। 
  তাহলে ব্যাপারটা দেখা যাচ্ছে এরকম গরুর  গোবর পরিবেশে মিথেন গ্যাস দিয়ে উষ্ণতার পরিমাণ বাড়ায়, আবার আবার গোবরে পোকা মিথেন গ্যাস কমিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। 

             
গুবরে পোকার উপকারিতা, বিটল পোকার উপকারিতা
বিজ্ঞানী গুবরে পোকা

  কিন্তু দেখা যাচ্ছে সারা পৃথিবী জুড়ে গরু প্রতিপালন যেভাবে বাড়ছে সেই হিসাবে গুবরে পোকার প্রজাতি ও  সংখ্যা দ্রুত কমছে। হয়তো এই বেসামাল অবস্থা সামাল দিতে পরবর্তীতে গুবরে পোকার চাষ করা যেতে পারে।

 শেষে একটা কথা বলে রাখি, কিছু গুবরে পোকা আছে যারা গোবরে থাকে, গোবর খায়, গোবরে ডিম পাড়ে। গুবরে পোকা গোবরের বল বানিয়ে একটা নিরাপদ দূরত্বে সেটিকে সরিয়ে নিয়ে যায় যাতে তারা পরবর্তীতে সেটাকে খেতে পারে এবং অন্যান্য প্রাণীদের থেকে তাদের খাবারটা বাঁচাতে পারে। আর এ কাজে তাদের সাহায্য করে ছায়াপথের আলো বা মিল্কিওয়ে। সুতরাং আমি আপনি যদি মনে করি বিজ্ঞানী শুধু মানুসই হয় তবে তা একদমই ভুল।

  
  

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সমুদ্রের জল লবনাক্ত কেন? সমুদ্রের জলে লবন কেন? সমুদ্রের জল নোনা কেন?

লাইফবয় সোপ ব্যানড / লাইফবয় সাবান পশুদের সাবান / লাইফবয় সাবান নিষিদ্ধ

মৌমাছি, মৌমাছির উপকারিতা | মৌমাছির অবদান